হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা (Role of Accounting)
আধুনিক যুগে
সরকারি, বেসরকারি, আধা সরকারি, শ্বায়ও শাসিত সকল প্রকার প্রতিষ্ঠানের জন্য হিসাববিজ্ঞানের
ভূমিকা সর্বাধিক। হিসাববিজ্ঞান প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে বব্যসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট স্বার্থ
সংরক্ষন করে। আধুনিক ব্যবসায়ে হিসাববিজ্ঞান নিমোক্ত ভূমিকা পালন করে থাকে।
১। লাভ-লোকসান
নির্ণয়ঃ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন করে। হিসাববিজ্ঞান কোন নির্দিষ্ট সময়ে ব্যবসায়ের
লাভ বা লোকসান নির্ধারণে সহাযতা করে
২। আর্থিক অবস্থা
নির্ণয়ঃ একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর ব্যবসায়ের দেনা-পাওনা, সম্পত্তি, মূলধন প্রভূতি সম্পর্কে
তথ্য প্রদানে হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা অপরিসীম।
৩। ব্যয় নিযন্ত্রনঃ
হিসাববিজ্ঞানের তথ্য থেকে সঠিক ব্যয়ের ধারনা পাওয়া যায়। ফলে প্রতিষ্ঠান ব্যয় নিয়ন্ত্রন
করতে পারে।
৪। শেয়ার মালিকদের
শ্বার্থ রক্ষাঃ শেয়ার মালিকদের মূলধন ও ল্ভ্যাংশ সম্পর্কে যে কোন সময় হিসাববিজ্ঞান
সঠিক ধারণা দিতে পারে।
৫। পাওনাদারদের
শ্বার্থ রক্ষাঃ পাওনাদারদের মোট দেনার পরিমান, ধারে ক্রয়ের পরিমান এবং ক্রিত পণ্যের
কারবারী এবং নগদে বাট্টার পরিমান প্রভূতি নির্ধারনের মাধ্যমে পাওনাদারদের স্বার্থ সংরক্ষন
করে থাকে।
৬। আয়কর নির্ণয়ঃ
ব্যবসায়ের আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে যে লাভ হয় তার উপর আয়কর নির্ণয় করা হয়। সুতরাং সুষ্ঠ
হিসাব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের সঠিক আয়কর নির্ণয়ে তাপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭। সরকারি নিয়ন্ত্রনঃ
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠভাবে হিসাব রাখলে সরকারের পক্ষে ঐসব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রন
করা সহজতর হয়।
৮। ব্যবস্থাপনার
হাতিয়ারঃ সুষ্ঠ হিসাব ব্যবস্থায় ব্যবসায়ের সঠিক তথ্য প্রদশিত হয়। ফলে ব্যবস্থাপনাকে পরিকল্পনা প্রণয়ন
ও আর্থিক নিয়ন্ত্রেন সহায়তা করে।
৯। প্রামান্য
দলিলঃ হিসাব সংক্রান্ত কোন মতপার্থক্য দেখা দিলে হিসাব বিজ্ঞানের হিসাব বহি আদালতে
যেমন প্রামান্য দলিল হিসেবে কাজ করে তেমনি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ঠ বিভিন্ন
পক্কের বিভিন্ন বিষয়ে ভুল্বুঝাবুঝি নিরসনে সহায়তা করে।
১০। দ্রব্যমূল্য
নির্ধারণঃ উৎপাদন ব্যয় নির্ণয় করে প্রত্যাশিত মুনাফা যোগ করলে তা সকল স্তরে গ্রহনযোগ্য
হয়। ফলে দ্রব্যমূল্য নির্ধারনে হিসাববিজ্ঞান সহাযতা করে।
১১। প্রতিযোগিতামূলক
বাজারঃ দেশ বিদেশের ব্যবসায় বাণিজ্য ও শিল্পে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা মোকাবেলা করতে
প্রতি”ষ্ঠানের সঠিক আয়-ব্যয় নির্ধারনের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য তুলনামূলক সর্বনিম্ন দ্রব্যমূল্য
নির্ধারন করার ক্ষেত্রে হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
১২। ভুল উদ্ঘাটন
ও নিবারণঃ সুষ্ঠ হিসাব ব্যবস্থা চালু থাকলে অতি সহজে ভুল-ত্রুটি আবিস্কার ও নিবারন
করা যায়।
১৩। বিনিযোগ
সিদ্ধান্তঃ ব্যবসায়ে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহন করার জন্য হিসাববিজ্ঞানের বিভিন্ন ধরনের
তথ্য সরবরাহ করে থাকে।
১৪। ফলাফল বিশ্লেষনঃ
প্রকৃত তথ্যের সাথে বাজেটের তুলনা করা যায়। ফলে ব্যবসায়ের গতিবিধি সম্পর্কে জ্ঞাত হয়ে
সরর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
১৫। আর্থিক
প্রতিবেদনঃ সঠিক হিসাব রক্ষনের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে প্রশাসনিক
কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন প্রকাশ করা যায়।
পরিশেষে বলা
যায় যে, ব্যবসায় বাণিজ্যে হিসাববিজ্ঞানের ভূমিকা অপরিসীম। কারণ হিসাববিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের
উদ্দেশ্যে অর্জনে সর্বাধিক সাহায্য করে থাকে।
0 মন্তব্যসমূহ